জিয়া, জিহাদ, জিয়াদ এবং একটি হত্যা
(একান্ত কাল্পনিক ব্যাপার, ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে নিলে আপনার নিজের ব্যাপার )
স্বর্গদ্বারে লম্বা লাইন, দেবদূত এক এক করে পরিচয় নিচ্ছে তারপর পাঠিয়ে দিচ্ছেন স্বর্গে,
হঠাৎ হাত পা ভাঙ্গা এক শিশুকে দেখে তাকে ডাকলেন,
দেবদূতঃ তোমার নাম কি?
শিশুঃ কোনটা বলব নাম?? মরার আগে তিনটা নাম দেয়া হয়েছে, মা-বাবা কোনটা দিয়েছে সেটাই ভুলে গিয়েছি!
দেবদূতঃ বুঝলাম না ব্যাপারটা!!
শিশুঃ মরার আগে আমার নাম সারা বাংলাদেশের মানুষ আমাকে জিয়া, জিহাদ, জিয়াদ নামে চিনছে, এখন আপনি কোনটা শুনেছেন কিভাবে বলব!!
দেবদূতঃ (অপ্রস্তুত হয়ে) ওহ! বুঝতে পেরেছি, তুমিইতো পাইপের মধ্যে পড়ে দুর্ঘটনায় পড়ে মারা গেছ।
শিশুঃ না তো, ওটাতো দুর্ঘটনা ছিল না! আমাকে তো মেরে ফেলছে!!
দেবদূতঃ (অবাক হয়ে) কিভাবে?
শিশুঃ আপনি বলুন পাইপের মধ্যে পড়লে আমি যে উঠতে পারব না, আমি মারা যাব সেই বুদ্ধি কি আমার হয়েছিল?
দেবদূতঃ না তা তো হয়নি!
শিশুঃ তাহলে, যাদের হয়েছিল তারাই তো নিরাপত্তা রাখেনি যাতে শিশুরা পড়ে, তাদের বাচ্চারা তো আমিউজম্যান্ট পার্কে নিরাপদে ঘুরে বেড়ায় তো তাই, ১৬ কোটি মানুষের দেশ, সেই দেশের উদ্বারকারী দল আমাকে জুস আর রশি ছাড়া কিছুই দেয়নি, আমার মরদেহটাও উদ্বার করতে পারেনি, মৃত্যুর আগেও আমি আমার মায়ের আর্তচিৎকার শুনেছি!
দেবদূতঃ তুমি চাইলে তোমার মা-বাবাকে একবার দেখে আসতে পার, আমি ব্যবস্থা করে দিতে পারি।
শিশুঃ নাহ, আমি দেশে আর যেতে চাই না, যে দেশে একজন মানুষ পাইপে পড়ে থাকলে সেখানে সাংবাদিক নামের এক শ্রেনীর প্রানী টিআরপি বাড়ানোর জন্যে প্রতিযোগীতায় নামে, উদ্বারকাজে তারা বিঘ্ন ঘটায়, একটি নিস্পাপ শিশুকে উদ্বার করতে পারেনা যে দেশের মানুষ, আটকে পড়া একটি বাচ্চাকে নিয়ে রাজনীতি চলে, একজন মানুষের জীবন যেখানে ড্রইয়ংরুমের বিনোদন সেখানে আমি আর সেখানে ফিরে যেতে চাই না!!
শিশুর প্রস্থান, আর দেবদূতের চোখে অশ্রু, একটু দূরেই মনে হয় ছিলেন অ্যালেকজান্ডার আর আবারো বলে উঠলেন, সেলুকাস! সত্যিই বড়ই বিচিত্র ঐ দেশ!!